অশোক গাছের নিচে বসে ওরা কথা শুরু করল। আস্তে আস্তে উঠে আসছে সোনার থালা চাঁদ।
পার্কের পাহারাদার বলে গেল, ভয় নেই, আমি কাছেই আছি।
পার্কের পাহারাদার বলে গেল, ভয় নেই, আমি কাছেই আছি।
ইলিয়াস বলল, চৌদ্দ বছর ধরে দেখছি এই অশোকের শুধু নিচের একটি ভালেই ফুল ফুটছে। আর অন্য সব ডালে পীতাভ নতুন পাতা। চোদ্দ বছরে একটুও পরিবর্তন হয় নি।
জিনাত বলি, চোদ্দ বছর ? তোমার সঙ্গে পরিচয় তো মাত্র পাঁচ বছর। আগে কার সঙ্গে অসিতে ?
ইলিয়াস মনে মনে সব ভেবে নিল। চোখের ওপর ভেসে উঠল একটি মুখশ্রী। অমনি সে নিজেকে সংযত করে নিয়ে বলল, চৌদ্দ বছর ধরে আমি অশোক গাছটি লক্ষ করছি।
মাঝে মাঝে গাছের পাতাগুলো উধাও হয়ে যায়, তবুও ফুল ফোটে থোকা থোকা, ঐ একটি ডালে। আজ যেমন লাল-হলুদ ফুলগুলো নিচের ডালে দেখছি আগেও তেমনি দেখছি।
আছে তো। আমরা এখানে বসছি ছ’বছর ধরে--ইলিয়াস বলল।
তোমার একটুও মনে নেই। তুমি একটি বছর বেমালুম হওয়া করে দিয়েছে । ছ' বছর ধরেই বসছি। ওরা আবার পারিজাত ফুল নিয়ে শুরু করল।
ইলিয়াস বলল, গত বছর তোমাকে পারিজাত দিয়াছিলাম মনে পড়ে?
জিনাত সাঙ্গে সঙ্গে বলল, পারিজাত নয় অপরাজিতা ।।
অমার স্পষ্ট মনে আছে। আমরা এখানে এই অশোকের নিচে বসেছিলাম। নিচের ডালে কয়েক থাকা ফুল ফুটেছিল। কার্জন হলের বাগান থেকে তোমার জন্যে পারিজাত এনেছিলাম।
জিনাত বলল, তুমি বোধোহয় স্বপ্ন দেখছ। স্বপ্নের কোনো প্রসঙ্গ এখন তোমার মনে পড়ছে পারিজাত নয় অপরাজিতা । এসময় মাথার ওপর কোকিল ডেকে ওদের জানিয়ে দিল দিন শেষ হয়ে গেছে। আকাশে সোনার থালাচাঁদ রুপােলি হচ্ছে। কোকিলটা ওদের জন্যেই যেন শেষবারের মতো গাইল।
জিনাত আবার বলল, তুমি কি সত্যিই পারিজাত এনেছিলে? সত্যিই।? অশোকের মতো থোকায় থোকায় ফোটে। তাহলে আমাকে নয় আর কাউকে দিয়েছিলে।
অমনি ইলিয়াসের মনে পড়ে গেল ছয় বছর আগের ঘটনা। সে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সেই থেকে দেখতে দেখতে।ছয়টি বছর কেটে গেল। এখনো সে পড়া শেষ করতে পারে নি।
এবছরের পরীক্ষা ও বছরে গড়ায়। গড়িয়ে আরো এক বছর শেষ হয়ে যায়। তবুও পরীক্ষা হয় না।
প্রথম বর্ষে সে মেডিকেলের তুহিনার প্রেমে পড়েছিল। সে এখন ইন্টার্নী ডাক্তার।
ইলিয়াস এখনো ছাত্র।
ইলিয়াস বলল, তাহলে কি নাগকেশরের গুচ্ছ ছিল ? আমার স্পট মনে আছে প্রত্যেক বৈশাখী পূর্ণিমায় তোমাকে ফুল দিয়েছি। প্রত্যেক বছর নতুন নতুন ফুল।
প্রথম বছর মালতী, পরের বছর পারিজাত, তারপর ঝুমকো, কদম, মুকুন্দ ও অপরাজিতা।
ছয় না, পাঁচ। পাঁচ বছর পাঁচ রকম ফুল। আমি পর পর।সাজিয়ে দিচ্ছি। মালতি, ঝুমকো, মুচকুন্দু, পারিজাত ও অপরাজিতা এবার পারুল।
আমি আগে কোনোদিন পারুল দেখি নি। শুধু অপরাজিতা ছিল পরিচিত ফুল। তাও পাঁচ পাপড়ির অপরাজিতা আমার চোখে পড়ে নি। সে বছর এত নীল অপরাজিতার মাঝে একটি সাদা অপরাজিতা কেন দিয়েছিলে ?
সাদা অপরাজিতা কিসের প্রতীক?
ইলিয়াস সাদা অপরাজিতার কথায় গেল না। তার মনে পড়ছে। পারিজাতের কথা।
চোদ্দ বছর আগে সে ছিল এগারো বছরের বালক। বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব স্কুলের ছাত্র তখন। বন্ধু ছিল আসাদ। সে-ই বলেছিল রমনা পার্কে যেতে। সেদিন ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা। স্কুল ছুটির দিন। নীলক্ষেতেই বাসা, তাই বের হতে পেরেছিল মাকে বলে।
সেই প্রথম দুই বন্ধুতে মিলে নিভৃত পার্কে যাওয়া। অশোকের একটি ডালে কয়েক থোকা ফুল ফুটেছিল। তারপর থেকে প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমায় পার্কে যেত। ম্যাটিক পরীক্ষার পর থেকে।সে একা হয়ে যায়।
অসাদ চলে যায় চট্টগ্রামে। এখন একেবারে বিদেশে। পূর্ণিমার সন্ধেরাতে পার্কে হাঁটতে হাঁটতে চাঁদ দেখা এখন তার ব্যক্তিগত সুখ। না, হবি নয়। হবি অন্য জিনিস।
ঢাকায় তার কয়েকটি একান্ত ব্যক্তিগত জায়গা আছে। ফুলার রোডের দুই প্রান্তের সড়ক দ্বীপ, শেরাটন হোটেলের পুব দিকের নাগলিঙ্গম গাছটি যেখানে ছিল তার নিচটা, আর্ট ইনষ্টিটিউটের শুকিয়ে যাওয়া পুকুরের পাড় আর এই অশোকতলা।
সবকথা সে জিনাতকে বলেছে।
জিনাতের সঙ্গে সব জায়গায় বসেছে। ফুলার রোডের দক্ষিণ মাথার সড়ক দ্বীপে কেউ বসে না। ঝাকড়া তেতুল গাছটা দেখলে তার গা রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে। সলিমুল্লাহ হলের সামনের বিশাল রেন টি -রা সমীহ আদায় করে।
ইলিয়াস এক সময় চুপ করে যায়। জিনাতও চুপচাপ। রাস্তায় গাড়ির শব্দ ছাড়া মাঝে মাঝে পার্কের কোনো গাছে যেন পাপিয়া ডাকছে। সোনার থালী চাদ রুপের বরন হয়। আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যায়।
রাত যত বাড়বে চাদ নিষ্ঠুর হয়ে উঠবে। কারো দুঃখে তার কিছু যায় আসে না। কারো কথা সে ভাবে না। অনন্তকাল ধরে সে বস্তুর মতো সবকিছু লক্ষ্য করে যাচ্ছে।
পৃথিবী তো তার মা। তার মা বেঁচে আছে, সে মৃত। ইলিয়াস ভাবে তার মা বেঁচে নেই, সে নিজেই বেঁচে আছে। বেঁচে থাকতে থাকতে হাঁফিয়ে উঠেছে। গেল বসন্তও গুরুভার ছিল। জীবন এখন বোঝার মতো।
জিনাত বলল, গত বছর তুমি অপরাজিতা দিয়েছিলে। মালতী, ঝুমকো, মুচকুন্দু, পারিজাত ও অপরাজিতা। এবার এনেছ পারুল।
ইলিয়াস আমতা আমতা করে বলল, অপরাজিতা নয়, পারিজাত। গতবছর ছিল পারিজাত।
না অপরাজিতা। লতসিদ্ধ অপরাজিতা। তার মাঝে একটি সাদা পাঁচ পাপড়ির অপরাজিতা ছিল।
ইলিয়াস বলল, তুমি কি ঠিক বলছ? তোমার স্মৃতিশক্তি কি তাই বলছে? হ্যা তাই। ঠিক তাই।
এ সময় কোকিলটা আবার ডেকে উঠল। সে তো সবই জানে। রাতেও সে পাকে ডাকে। সেও পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গী নিয়ে রমনা পার্কে আছে। সে সবকিছু জানে, কিন্তু মানুষকে সে বোঝাবে কি করে? মানুষ তার গানের অর্থ ও ভাষা শিখতে চায় না।
বসন্তের আনন্দের পাখি বলে তাকে ডাকে। ভালোবাসার দূত বলে। সে খুব করে বলতে চাইছে গত বছর একে অন্যকে পারিজাত নাকি অপরাজিত দিয়েছিল। রমনা পার্কের কোথায় অপরাজিতা আর কোনখানে পারিজাত আছে সে ভালো জানে।
সে ডেকে বলল, তোমরা দেখতে চাও? ইলিয়াস বলল, আসিলে তুমি আজ আমার কথা মানবেই না। তবুও বলছি একবার মনে করে দ্যাখো।
জিনাত বলল, আমি জানি আগের বছর পারিজাত এবং গত বছর অপরাজিতা দিয়েছিলে। প্রত্যেকটি ফুল আমি যত্ন করে রেখে।দিয়েছি।
কোকিলটা আবার ডেকে বলল, ঠিক, ঠিক ঠিক আমি বলছি, জীবন মধুর। সামনে পড়ে আছে ভবিষ্যৎ। আমরা বসন্তে জোট বেঁধে ডাকি। ওই তো আমার সঙ্গী। তোমরা যদি আমার কথা বুঝতে তাহলে আমি সব খুলে বলতে পারতাম।কার কথা সঠিক।
তোমরা তো আমার কথা বোঝো না। ভালোবাসার কিছুই বোঝ না।
ইলিয়াস বা জিনাত কেউ যেন হার মানবে না। জিনাত এবার বলল, চলো উঠি। ইলিয়াস বলল, আমার ডায়েরীতে সব লেখা আছে।
কোকিল বলল, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ। আমি জানি আসল সত্য। কিন্তু তোমরা তো আমার কথা শুনতে চাও না। আমাদের ভাষা শিখতে চাও না। প্রকৃতির ওপর তোমাদের আস্থা নেই।
পরের বছর বৈশাখী পূর্ণিমায়ও সেই অশোক গাছের নিচের ডালটিতেই ফুল ফুটেছে। ইলিয়াস নিয়ে এসেছে দুপাপ্য সেঞ্চুরী ফুল। সেই আগের মতো কোন বছর কোন ফুল দিয়েছিল তা নিয়ে ওরা কথা তুলল না।
কোকিলও আগের মত কিক কিক করে অন্য কিছু অরি বলল না।
এবার ইলিয়াসের সঙ্গে জিনাত যে নেই।
জিনাত আবার বলল, তুমি কি সত্যিই পারিজাত এনেছিলে? সত্যিই।? অশোকের মতো থোকায় থোকায় ফোটে। তাহলে আমাকে নয় আর কাউকে দিয়েছিলে।
অমনি ইলিয়াসের মনে পড়ে গেল ছয় বছর আগের ঘটনা। সে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সেই থেকে দেখতে দেখতে।ছয়টি বছর কেটে গেল। এখনো সে পড়া শেষ করতে পারে নি।
এবছরের পরীক্ষা ও বছরে গড়ায়। গড়িয়ে আরো এক বছর শেষ হয়ে যায়। তবুও পরীক্ষা হয় না।
প্রথম বর্ষে সে মেডিকেলের তুহিনার প্রেমে পড়েছিল। সে এখন ইন্টার্নী ডাক্তার।
ইলিয়াস এখনো ছাত্র।
ইলিয়াস বলল, তাহলে কি নাগকেশরের গুচ্ছ ছিল ? আমার স্পট মনে আছে প্রত্যেক বৈশাখী পূর্ণিমায় তোমাকে ফুল দিয়েছি। প্রত্যেক বছর নতুন নতুন ফুল।
প্রথম বছর মালতী, পরের বছর পারিজাত, তারপর ঝুমকো, কদম, মুকুন্দ ও অপরাজিতা।
ছয় না, পাঁচ। পাঁচ বছর পাঁচ রকম ফুল। আমি পর পর।সাজিয়ে দিচ্ছি। মালতি, ঝুমকো, মুচকুন্দু, পারিজাত ও অপরাজিতা এবার পারুল।
আমি আগে কোনোদিন পারুল দেখি নি। শুধু অপরাজিতা ছিল পরিচিত ফুল। তাও পাঁচ পাপড়ির অপরাজিতা আমার চোখে পড়ে নি। সে বছর এত নীল অপরাজিতার মাঝে একটি সাদা অপরাজিতা কেন দিয়েছিলে ?
সাদা অপরাজিতা কিসের প্রতীক?
ইলিয়াস সাদা অপরাজিতার কথায় গেল না। তার মনে পড়ছে। পারিজাতের কথা।
চোদ্দ বছর আগে সে ছিল এগারো বছরের বালক। বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব স্কুলের ছাত্র তখন। বন্ধু ছিল আসাদ। সে-ই বলেছিল রমনা পার্কে যেতে। সেদিন ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা। স্কুল ছুটির দিন। নীলক্ষেতেই বাসা, তাই বের হতে পেরেছিল মাকে বলে।
সেই প্রথম দুই বন্ধুতে মিলে নিভৃত পার্কে যাওয়া। অশোকের একটি ডালে কয়েক থোকা ফুল ফুটেছিল। তারপর থেকে প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমায় পার্কে যেত। ম্যাটিক পরীক্ষার পর থেকে।সে একা হয়ে যায়।
অসাদ চলে যায় চট্টগ্রামে। এখন একেবারে বিদেশে। পূর্ণিমার সন্ধেরাতে পার্কে হাঁটতে হাঁটতে চাঁদ দেখা এখন তার ব্যক্তিগত সুখ। না, হবি নয়। হবি অন্য জিনিস।
ঢাকায় তার কয়েকটি একান্ত ব্যক্তিগত জায়গা আছে। ফুলার রোডের দুই প্রান্তের সড়ক দ্বীপ, শেরাটন হোটেলের পুব দিকের নাগলিঙ্গম গাছটি যেখানে ছিল তার নিচটা, আর্ট ইনষ্টিটিউটের শুকিয়ে যাওয়া পুকুরের পাড় আর এই অশোকতলা।
সবকথা সে জিনাতকে বলেছে।
জিনাতের সঙ্গে সব জায়গায় বসেছে। ফুলার রোডের দক্ষিণ মাথার সড়ক দ্বীপে কেউ বসে না। ঝাকড়া তেতুল গাছটা দেখলে তার গা রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে। সলিমুল্লাহ হলের সামনের বিশাল রেন টি -রা সমীহ আদায় করে।
ইলিয়াস এক সময় চুপ করে যায়। জিনাতও চুপচাপ। রাস্তায় গাড়ির শব্দ ছাড়া মাঝে মাঝে পার্কের কোনো গাছে যেন পাপিয়া ডাকছে। সোনার থালী চাদ রুপের বরন হয়। আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যায়।
রাত যত বাড়বে চাদ নিষ্ঠুর হয়ে উঠবে। কারো দুঃখে তার কিছু যায় আসে না। কারো কথা সে ভাবে না। অনন্তকাল ধরে সে বস্তুর মতো সবকিছু লক্ষ্য করে যাচ্ছে।
পৃথিবী তো তার মা। তার মা বেঁচে আছে, সে মৃত। ইলিয়াস ভাবে তার মা বেঁচে নেই, সে নিজেই বেঁচে আছে। বেঁচে থাকতে থাকতে হাঁফিয়ে উঠেছে। গেল বসন্তও গুরুভার ছিল। জীবন এখন বোঝার মতো।
জিনাত বলল, গত বছর তুমি অপরাজিতা দিয়েছিলে। মালতী, ঝুমকো, মুচকুন্দু, পারিজাত ও অপরাজিতা। এবার এনেছ পারুল।
ইলিয়াস আমতা আমতা করে বলল, অপরাজিতা নয়, পারিজাত। গতবছর ছিল পারিজাত।
না অপরাজিতা। লতসিদ্ধ অপরাজিতা। তার মাঝে একটি সাদা পাঁচ পাপড়ির অপরাজিতা ছিল।
ইলিয়াস বলল, তুমি কি ঠিক বলছ? তোমার স্মৃতিশক্তি কি তাই বলছে? হ্যা তাই। ঠিক তাই।
এ সময় কোকিলটা আবার ডেকে উঠল। সে তো সবই জানে। রাতেও সে পাকে ডাকে। সেও পাঁচ বছর ধরে তার সঙ্গী নিয়ে রমনা পার্কে আছে। সে সবকিছু জানে, কিন্তু মানুষকে সে বোঝাবে কি করে? মানুষ তার গানের অর্থ ও ভাষা শিখতে চায় না।
বসন্তের আনন্দের পাখি বলে তাকে ডাকে। ভালোবাসার দূত বলে। সে খুব করে বলতে চাইছে গত বছর একে অন্যকে পারিজাত নাকি অপরাজিত দিয়েছিল। রমনা পার্কের কোথায় অপরাজিতা আর কোনখানে পারিজাত আছে সে ভালো জানে।
সে ডেকে বলল, তোমরা দেখতে চাও? ইলিয়াস বলল, আসিলে তুমি আজ আমার কথা মানবেই না। তবুও বলছি একবার মনে করে দ্যাখো।
জিনাত বলল, আমি জানি আগের বছর পারিজাত এবং গত বছর অপরাজিতা দিয়েছিলে। প্রত্যেকটি ফুল আমি যত্ন করে রেখে।দিয়েছি।
কোকিলটা আবার ডেকে বলল, ঠিক, ঠিক ঠিক আমি বলছি, জীবন মধুর। সামনে পড়ে আছে ভবিষ্যৎ। আমরা বসন্তে জোট বেঁধে ডাকি। ওই তো আমার সঙ্গী। তোমরা যদি আমার কথা বুঝতে তাহলে আমি সব খুলে বলতে পারতাম।কার কথা সঠিক।
তোমরা তো আমার কথা বোঝো না। ভালোবাসার কিছুই বোঝ না।
ইলিয়াস বা জিনাত কেউ যেন হার মানবে না। জিনাত এবার বলল, চলো উঠি। ইলিয়াস বলল, আমার ডায়েরীতে সব লেখা আছে।
কোকিল বলল, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ। আমি জানি আসল সত্য। কিন্তু তোমরা তো আমার কথা শুনতে চাও না। আমাদের ভাষা শিখতে চাও না। প্রকৃতির ওপর তোমাদের আস্থা নেই।
পরের বছর বৈশাখী পূর্ণিমায়ও সেই অশোক গাছের নিচের ডালটিতেই ফুল ফুটেছে। ইলিয়াস নিয়ে এসেছে দুপাপ্য সেঞ্চুরী ফুল। সেই আগের মতো কোন বছর কোন ফুল দিয়েছিল তা নিয়ে ওরা কথা তুলল না।
কোকিলও আগের মত কিক কিক করে অন্য কিছু অরি বলল না।
এবার ইলিয়াসের সঙ্গে জিনাত যে নেই।
আরো নতুন নতুন valobasar Golpo পড়তে ভিজিট করুন
উত্তরমুছুনWWW.VALOBASARGOLPO2.XYZ